গলাচিপায় ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফানে’ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা বিধ্বস্ত

গলাচিপায় ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফানে’ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা বিধ্বস্ত

নিয়ামুর রশিদ শিহাব, গলাচিপা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :
 সুপার সাইক্লোন আমফানে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গত ২৭মে রাতে আকস্মিক ঝড়ে সম্পূর্ন ভাবে বিধ্বস্ত হয় গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি।
সরেজমিনে গেলে মাদ্রাসার সুপার মাও. মো. মাহবুবুর রহমান কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, এই এলাকায় কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে ডাকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব আটখালী ৭নং ওয়ার্ডে আলহাজ মাও. মোঃ মজিবুল হক উদ্যোগে মাদ্রাসাটি ১৯৮৫ইং সনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৮৭ইং সনে এমপিওভুক্ত হয়। স্থানীয় মানুষের সাহায্যার্থে এ মাদ্রাসাটি নির্মিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে প্রায় প্রতি বছরই ভাল ফলাফলের মাধ্যমে লেখাপড়া চলে আসছে। কিন্তু ২০২০ সালে সুপার সাইক্লোন আম্ফানে মাদ্রাসাটি হেলে পরে। তার কয়েকদিন পরে ২৭-৫-২০২০ইং টর্নেডোর আঘাতে মাদ্রাসাটি সম্পূর্নরুপে বিধ্বস্ত হয়ে পরে যায়। এতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। মাদ্রাসাটি ৬০ ফুট লম্বা এবং ১৮ ফুট পাশ টিনসেটের এই ঘরটি সম্পন্ন বিধ্বস্ত হয়েছে বেঞ্চগুলো চাপা পড়ে ভেঙে গেছে ঘরের টিনগুলো উড়ে গেছে।
ডাকুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত কোন পাকা ভবন পাইনি। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই দাবী আমরা জাতে একটি নতুন পাকা ভবন পাইতে পারি।
প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কিছু চাঁদা ও কিছু ধার দেনা করে বিভিন্ন ভাবে মাদ্রাসাটি নির্মাণের চেষ্টা করছি। বৃষ্টি আসলেই ছাত্র ছাত্রীদের বই পুস্তক অফিসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিজে যায়। ব্যাপক ব্যাহত হচ্ছে লেখাপড়ার। ঘর না থাকায় খোলা মাঠে রোদ বৃষ্টি উভয়ই সমস্যা হচ্ছে। মাদ্রাসাটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। বর্তমানে উক্ত মাদ্রাসায় ৩৫০ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। ২০১৯ সালে ফলাফল সন্তোষ জনক।
স্থানীয় অনেক অভিভাবক জানান, এখানে খুব ভাল লেখাপড়া চলছিল কিন্তু বন্যায় মাদ্রাসাটি নষ্ট হওয়ার পরে (পোলাপান) ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমত পড়তে পারে না। এই মাদ্রাসায় বর্তমানে প্রায় ৩শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করছে। জেডিসি এবং দাখিল পরীক্ষার ফলাফল খুবই ভালো। একদিকে করোনা ভাইরাস অন্যদিকে মাদ্রাসার কোন ভবন নেই এখন যদি দ্রুত মাদ্রাসার এই ঘরটি মেরামত করা না হলে ছেলেমেয়েদের পাঠদানে খুবই অসুবিধা হবে সামনে।
মাদ্রাসার সহসুপার মাওঃ মোঃ ইলিয়াস জানান, এ অবস্থার কারনে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করতে অসুবিধা হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সে জন্য কোনমতে ঠিক করার চেষ্টা করিতেছি। যাতে করে করোনা ভাইরাস গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাইতে পারি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, ডাকুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি মাদ্রাসটি সম্পূর্ন রুপে বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূনিঝড় আম্ফানে এবং টর্নেডোর আঘাতে যে সকল প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সকল প্রতিষ্ঠানেই তালিকা করে পাঠানো হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত সকল প্রতিষ্ঠানে কম বেশি বরাদ্ধ দেবার জন্য জেলা শহর পটুয়াখালী তালিকা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ আসলেই পেয়ে যাবে। আশাকরি যেখানে এখন পর্যন্ত নতুন পাকা ভবন নেই সেখানে পর্যায়ক্রমে সকলেই পাকা ভবন পাবে। তবে একটু ধর্য ধরতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।